কিস্তোয়ার জরিপের সংজ্ঞা

কিস্তোয়ার জরিপের সংজ্ঞা – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “সার্ভেয়িং ১” এর “কিস্তোয়ার জরিপের প্রাথমিক ধারণা” পাঠ এর অংশ।

কিস্তোয়ার জরিপের সংজ্ঞা

 

কিস্তোয়ার জরিপের সংজ্ঞা

কিস্তোয়ার জরিপ অর্থ কিত্তা কিত্তা করে জরিপ করা। কিস্তোয়ার শব্দটি ফরাসি শব্দ ‘Cadastre’ হতে উৎপত্তি হয়েছে। Cadastre শব্দের অর্থ জরিপের রেজিস্টারি বই। সরকারি খাজনা নির্ধারণ, জমির স্বত্ত্ব ও মালিকানার প্রকারভেদ ইত্যাদির জন্য এলাকা, মৌজা চ বা গ্রামের খণ্ড খণ্ড জমিকে দাগে দাগে মেপে নির্দিষ্ট স্কেলে (সাধারণত 16” = 1 মাইল স্কেলে বা নক্শা প্রণয়ন করা হয়। 3960 সাদৃশ্য ভগ্নাংশে) এ জরিপ যে জরিপের সাহায্যে কোনো এলাকা, মৌজা বা গ্রামের অন্তর্গত জমির প্লটগুলো দাগে দাগে মেপে নকশায়ন, মালিকানা ও স্বত্ব নিরূপণ, জমির শ্রেণিভেদ নির্ধারণ, খাজনার হার ধার্যকরণ ইত্যদি করা হয়, তাকে কিস্তোয়ার জরিপ (Cadastral survey) বলা হয় ।

কিস্তোয়ার জরিপ সরকারি জরিপ সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত সেটেলমেন্ট জরিপ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদেশে ১৮৭৫ সালের সার্ভে আইন এবং টেকনিক্যাল রুলের নির্দেশ মোতাবেক মৌজাভিত্তিক নক্‌শা এবং ১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ব আইন ও ১৯৫৫ সনের প্রজাস্বত্ব বিধিমালা এস.এস. ম্যানুয়ালের বিধান মোতাবেক ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত খতিয়ান (স্বত্বলিপি) বা ভূমি রেকর্ড প্রণয়ন করা হয়। মৌজাভিত্তিক নক্‌শা ও রেকর্ড প্রণয়নের এ কার্যক্রমকে এদেশে ভূমি জরিপ (Land survey) নামে আখ্যায়িত করা হয়। ভূমি জরিপের মাধ্যমে নতুন নক্‌শা ও রেকর্ড তৈরি করা হয় অথবা ইতিপূর্বে প্রণীত নক্‌শা ও রেকর্ড সংশোধন করে সময়উপযোগী করা হয়। ভূমি জরিপের কাজকে সার্বিক জরিপ (Major settlement operation) ও দিয়ারা বা আংশিক জরিপ (Minor settlement operation)-এই দু’ভাগে ভাগ করা হয় ।

 

 

কিস্তোয়ার জরিপের সংজ্ঞা

 

কোনো ভূমি রাজস্ব ইউনিটের সমগ্র এলাকায় (জেলার) নক্শা ও রেকর্ড প্রণয়ন করার জন্য যে জরিপ পরিচালনা করা হয়, তাকে সার্বিক জরিপ বা কিস্তোয়ার জরিপ বলা হয়। তবে বাংলাদেশে জেলাওয়্যারি প্রথম যে সার্বিক জরিপ (১৮৮৮ হতে ১৯৪০ সাল) করা হয় তা জনগণের নিকট সি.এস (CS = Cadastral survey) নামে পরিচিত। পরবর্তীকালে (১৯২৪ হতে ১৯৪৯ সাল) পরিচালিত সার্বিক জরিপের সঙ্গে প্রথম সার্বিক জরিপের পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য পরবর্তীকালের সার্বিক কিস্তোয়ার জরিপকে রিভিশনাল সেটেলমেন্ট অপারেশন বা রিভিশনাল সার্ভে (আর.এস) নামে আখ্যায়িত করা হয়।

মূলত সি.এস (CS) জরিপের একটি সংশোধনমূলক জরিপই হলো আর.এস. (R.S)। এরপর পাকিস্তান আমলে (১৯৫৬–১৯৬৫ সাল) এস.এ.এস (State Acquisition Survey) বা পি.এস (Pakistan Survey) সরজমিনে না করে জমিদারগণের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে করা হয়। এতে ভুলভ্রান্তির ব্যাপকতা প্রদত্ত কমিটির নিকট পরিলক্ষিত হয়। সর্বশেষ জরিপ বি.এস (Bangladesh Survey) সময়কাল ১৯৭০ হতে ১৯৯০ সাল । এ জরিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ২০ হতে ২৫ বছর পর পর এ ধরনের জরিপ করা হয়ে থাকে। নদী বা সমুদ্রে নতুন জেগে উঠা চর জরিপ করার জন্য যে জরিপ পরিচালনা করা হয়, তাকে দিয়ারা বা আংশিক জরিপ বলা হয় ।

প্লেন টেবিল জরিপের উদ্দেশ্য ও আওতা
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

নদী ভাঙ্গন বা অন্য কোনো কারণে সার্বিক জরিপকালে স্থাপিত পিলার হারিয়ে গেলে তা পুনঃস্থাপন করতে বা সার্বিক জরিপের কোনো ভুলভ্রান্তি সংশোধনে বা পূর্বজরিপে স্থাপিত তথ্যাদি নিরীক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে যে জরিপ করা হয়, তাকে পুনঃজরিপ বলা হয় ।

Leave a Comment